Friday, May 11, 2012

অস্বাভাবিক যৌন আচরন

স্বমৈথুন / আত্ম মৈথুন (Masturbation)
 যখন একজন মানুষ অন্য কোনো মানুষের বা প্রানীর সংস্পর্শ ছাড়া নিজে নিজেই যৌনক্রিয়া সম্পন্ন করে এবং চুড়ান্ত পরিতৃপ্তি লাভ করে তাকে আত্ম মৈথুন বা স্বমৈথুন বলা হয়। পুরুষেরা সাধারনত বালিশ বা বিছানার সাথে পুরুষাঙ্গ ঘর্ষনের মাধ্যমে এমনটি করায় অভ্যস্ত হয়ে থাকে। তবে বিভিন্ন ধরনের বোতল, টেষ্ট টিউব, রাবারের তৈরী কৃত্রিম যোনিপথ বা ডিভাইস, খেলনা পুতুল ইত্যাদি সামগ্রীও এজন্য ব্যবহার করতে দেখা যায়। যখন হাতের সাহায্যে একাজটি করা হয় তাকে হস্ত মৈথুন বলে। মহিলারা সাধারনত একটি আঙ্গুলের

সাহায্যে আলতোকরে একটা নির্দিষ্ট ছন্দে ভগাঙ্কুর (Clitroris) ও যোনি পাপড়ি (Labia minora) মর্দন করে যৌন পরিতৃপ্তি নিয়ে থাকে। এছাড়া হাত, বালিশ, বিছানা বা এই জাতীয় কিছু দিয়ে যৌনাঙ্গ চেপে ধরে রেখেও অনেকে পূর্ন পরিতৃপ্তি নেয়। রাবারের তৈরী কৃত্রিম পুরুষাঙ্গ, নিজের আঙ্গুল, কাঠের মসৃন দন্ড, টেষ্ট টিউব ইত্যাদি সামগ্রী যোনি পথে প্রবেশ করিয়েও অনেকে আত্ম মৈথুন করে থাকে। আত্ম মৈথুন কে স্বাভাবিক যৌনাচার হিসেবে গন্য করা হয়। তবে কেউ যদি সুস্থ্য ও সম্মত যৌনসঙ্গী থাকা সত্ত্বেও আত্মমৈথুন কেই কেবল পরিতৃপ্তির মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করে তাহলে তা স্বাভাবিক নয় বলে ধরে নেয়া হয়। জনসম্মুখে আত্মমৈথুন করাটাও স্বাভাবিক যৌনাচার নয়, একে বিকৃত যৌনাচার হিসেবে গন্য করা হয় এবং এটা শাস্তিযোগে অপরাধ।

ওরাল সেক্স (Sexual oralism)
মুখ গহ্ববর দ্বারা বিপরীত লিঙ্গ বা সমলিঙ্গের যৌনাঙ্গ চোষন (Sucking) বা লেহন করে যে যৌন ক্রিয়া সম্পন্ন করা হয় তাকে ওরাল সেক্স বলা হয়। এটা দু ধরনের, যখন পুরুষ সঙ্গীটি স্ত্রী সঙ্গীর যৌনাঙ্গ চোষন করে পুর্ন যৌন পরিতৃপ্তি গ্রহন করে তাকে কনিলিঙ্গাস (Connillingus) বলা হয়। আবার স্ত্রী সঙ্গীটি পুরুষ সঙ্গীর যৌনাঙ্গ চোষন করে পুর্ন যৌন পরিতৃপ্তি গ্রহন করলে তাকে ফেলাসিও (Fellatio) বলা হয়। যুগলদের মধ্যে কনিলিঙ্গাস এবং ফেলাসিও ই যখন চরম যৌন পরিতৃপ্তি লাভের একমাত্র ক্রিয়া হিসেবে ব্যবহৃত হয় তখন তা অস্বাভাবিক যৌনাচার হিসেবে গন্য করা হয়। যখন কোনো যুগল মুল রতি ক্রিয়া বা মিলনের পূর্বে Love play এর অংশ হিসেবে ওরাল সেক্স করে তখন তা স্বাভাবিক যৌনাচার হিসেবেই গন্য করা হয়


ইনসেস্ট (Incest)
আপন আত্মীয় স্বজন যাদের সাথে সামাজিক বা ধর্মীয় ভাবে বিবাহ নিষিদ্ধ তাদের সাথে যৌনাচার করাকে ইনসেষ্ট বলা হয়। আপন মা, বাবা, ভাই, বোন, মামা,চাচা, খালা, ফুফু, নানা, দাদা, নানী, দাদী, ভাগ্না, ভাগ্নি, ভাতিজা, ভাতিজি , সৎ ভাই বোন, সৎ মা-বাবা (হিন্দু ও খৃষ্ট ধর্মে আপন চাচাতো / মামাতো ভাইবোন) এদের সাথে বিবাহ ধর্মীয় ভাবে নিষিদ্ধ, এদের সাথে কোনো অবস্থায় যৌন সম্পর্ক স্থাপনই ইনসেষ্ট হিসেবে গন্য হয়। সাধারণত মাতাল বা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় এমনটি ঘটে থাকে, এছাড়া চরম যৌন উত্তেজনাকর অবস্থায়, অল্পবয়সে একাকী এবং ঘনিষ্টভাবে থাকার কারনেও এমনটি হয়ে থাকতে পারে। পরবর্তীতে পরিণত বয়সে এ জন্য মানুষ কে চরম অনুতপ্ত হতে হয় এবং এজন্য অনেকেই অনেক ধরনের মানসিক ব্যধিতে ভুগে থাকে

সোডোমি (Sodomy)
গুহ্যদার বা পায়ুপথ দিয়ে যৌনাচার করাকে সোডোমি বলা হয়। সোডোমি যদিও দুটি পুরুষের মধ্যেই বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় তবে একজন পুরুষ একজন মহিলার পায়ুপথে যৌনাঙ্গ প্রবেশ করালেও তা সোডোমি হিসেবে গন্য করা হয়। সোডোমিকে স্বাভাবিক যৌনাচার হিসেবে গন্য করা হয়না। যেসব দেশে সমকামীতার অনুমতি নেই সেখানে সোডোমি একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। স্ত্রীর সাথে সোডোমি করা ধর্মীয় ভাবে নিষিদ্ধ করা আছে। স্ত্রীর অনুমতি ব্যতীত এমন যৌনাচার শাস্তিযোগ্য অপরাধ / ধর্ষণ হিসেবে গণ্য হয়। সমকামীতা হিসেবে সোডোমি নাবিক, জেলখানার কয়েদী, প্রতিরক্ষাবাহিনী এবং ছাত্রাবাসে থাকা ছাত্রদের মধ্যে বেশী দেখা যায়। এমন ব্যভিচারের কারনে যৌনবাহিত রোগ (যেমন এইডস) খুব দ্রুত ছড়িয়ে পরে

লেসবিয়ানিজম (Lesbianism or Tribadism)
দুটি মেয়ের মধ্যে কৃত যৌনাচার কে লেসবিয়ানিজম বলা হয়, এটা একধরনের সমকামীতা। একে একসময় সব দেশেই বিকৃত যৌনাচার এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গন্য করা হতো, বর্তমানে অনেক দেশেই লেসবিয়ানিজমের অনুমতি দেয়া হয়। এটা আসলে স্বাভাবিক কোনো যৌনাচার নয়, এক ধরনের মানসিক বৈকল্যের কারনে এমনটি ঘটতে পারে। এই ধরনের মহিলারা পুরুষদের প্রতি আগ্রহহীন এবং উদাসীন থাকে এবং এদের নারী সংগীটির প্রতিও এদের অদম্য হিংসা থেকে থাকে। সাধারনত পরষ্পরের যৌনাঙ্গ ঘর্ষন, ওষ্ঠ চুম্বন, স্তন মর্দন, ভগাঙ্কুর মর্দন এসব ক্রিয়ার মাধ্যমে লেসবিয়ানিজম করা হয়ে থাকে। নিঃসঙ্গতা,একাকীত্ব, পারিবারিক কলহ ইত্যাদিকে অনেক সময় এই বৈকল্যের কারন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ছাত্রী নিবাসের ছাত্রী বা ডরমেটরিতে থাকা মেয়েদের ও অনেকসময় এমন কাজে উৎসাহিত হতে দেখা যায়। এভাবে পুরুষের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলা এবং কেবল নারীর প্রতি যৌনউত্তেজনা অনুভব করা একধরনের মানসিক ব্যধি তাই মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করে এর থেকে মুক্তি পাবার চেষ্টা করা উচিত

বিসটিয়ালিটি (Bestiality)
পশু-পাখির সাথে মানুষের অবৈধ যৌনাচারকে বিসটিয়ালিটি বলে। এটা একধরনের অস্বাভাবিক এবং বিকৃত যৌনাচার বলে গন্য হয়। এই ধরনের লোকগুলো নিসঙ্গতার কারনে একধরনের মানসিক ব্যধিতে ভোগে এই ধরনের বিকৃত যৌনাচারে লিপ্ত হয়। সাধারনত রাখাল শ্রেনীর পেশাজীবিদের মধ্যে এই প্রবণতা বেশী থাকতে দেখা যায়। গরু, বাছুর, ছাগল, গাধা, শুকর, হাস, রাজহাস, মুরগি থেকে শুরু করে অন্য পশুপাখীদের সাথেও এমন কাজ করার ঘটনা ঘটতে পারে। এটা শাস্তি যোগ্য অপরাধ। সামাজিক, ধর্মীয়, রাষ্ট্রীয় কোনোভাবেই এমন পাপাচারের স্বীকৃতি দেয়া হয়না। এর ফলে অপরাধীর যৌনাঙ্গ অনেক সময় আঘাতপ্রাপ্ত হয় এবং মানুষটি একসময় পুরোপুরি মানসিক বিকৃতির দিকে চলে যেতে থাকে। তাই কারো মনে এমন প্রবণতা জাগ্রত হলে শুরুতেই মনোরোগ চিকিৎসকের স্মরনাপন্ন হওয়া উচিত



একজিবিশনিজম (Exhibitionism)
।এ ধরনের বিকৃত যৌনাচারি জনসম্মুখে (Public place) তার যৌনাঙ্গ প্রদর্শন করে যৌনতৃপ্তি লাভ করে। সাধারনত বিকৃত রুচির পুরুষটি চলন্ত ট্রেনের কামড়া, বাস, বাস স্টপেজ, স্নানাগারের সম্মুখ, সমুদ্রের পার ইত্যাদি স্থানে মহিলাদের সামনে ইচ্ছাকৃত ভাবে তার যৌনাঙ্গ প্রদর্শন করে এবং কখনো কখনো হস্তমৈথুন করে তার পরিতৃপ্তি লাভ করে। ইদানিং অনেক মহিলাদের মধ্যেও এমন বিকৃতি দেখা যায়।